ব্লগার থেকে টাকা আয় করা সহজ।
মোবাইল কিংবা কম্পিউটার; সকল রকম স্মার্ট ডিভাইসে আপনি ব্লগার ব্যবহার করে আয় করতে
পারবেন।
মোবাইল দিয়ে ব্লগার থেকে টাকা ইনকাম করা যাবে কি?
উত্তরঃ হ্যা করা যাবে।
আমাদের কাছে অনেকসময় কম্পিউটার থাকে না। যার জন্য তারা মনে করে কম্পিউটার ছাড়া বুঝি
ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় না অনলাইন থেকে টাকা আয় করা যায় না।তাদের ধারনা সম্পূর্ণরূপে ভুল।
মোবাইল দিয়ে ব্লগার থেকে টাকা ইনকাম করা যায়। এবং এটি খুব সহজেই করা যায়।
ব্লগার থেকে টাকা আয় করতে হলে কি কি লাগবে?
ব্লগার দিয়ে টাকা আয় করতে হলে প্রথমে যে জিনিসটি লাগবে তা হলো একটি ব্লগার ওয়েবসাইট। আর
ব্লগার দিয়ে একটি ওয়েবসাইট বানাতে এবং সেখান থেকে টাকা আয় করতে কয়েকটি জিনিসের
প্রয়োজন হয়, যেমনঃ
মোবাইল/কম্পিউটার/ অন্য কোনো স্মার্ট ডিভাইস।
ইন্টারনেট সংযোগ।
গুগল একাউন্ট।
ওয়েবসাইট তৈরি করার মতো সাধারন জ্ঞান।
ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত মূল্যবান কন্টেন্ট বা আর্টিকাল।
ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত ট্র্যাফিক বা ভিজিটর।
এই কয়েকটি জিনিস হলেই আপনি ব্লগারের মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখান থেকে বিভিন্ন
উপায়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত ভিজিটর নিয়ে আসতে সাইটের এসইও করতেও অনেক সময় লাগে।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
এটি সময় সাপেক্ষ্য একটি ব্যাপার। কেননা, প্রতিমাসে ১০,০০০ টাকা ব্লগার থেকে আয় করতে হলে
সেখানে আপনাকে নূন্যতম ২০০ আর্টিকাল প্রকাশ করতে হবে।
ব্লগার থেকে টাকা আয় করার উপায়
ব্লগ তৈরি করে আয় করার অনেকে উপায় রয়েছে।
এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো গুগল এডসেন্স, এফিলিয়েট মার্কেটিং, স্পন্সরশিপ রিভিউ, ডিজিটাল
প্রোডাক্ট বিক্রি, ডিজিটাল সার্ভিস, অনলাইন কোর্স, গেস্ট ব্লগিং, লিংক বিক্রি, ইত্যাদি।
Blogging theke taka income korar upai সবগুলো নিয়ে নিচে কথা বলবো।
হয়তো আপনাদের আরেকটি প্রশ্ন থাকতে পারে যে, বাংলায় ব্লগিং করে ব্লগার থেকে ইনকাম করা যায়
কিনা। এর উত্তর আর্টিকালে নিচে আপনারা পেয়ে যাবেন।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
এখন বেশি কথা না বলে চলেন ব্লগার এর মাধ্যমে টাকা আয় করার সকল উপায়গুলো জেনে নিইঃ
গুগল এডসেন্সঃ
ব্লগিং এর সাথে সংশ্লিষ্ট এমন কেউ নেই যিনি গুগল এডসেন্স নামটি শুনেননি। একটি গুগলের একটি
বিজ্ঞাপন প্রচার প্রোগ্রাম।
ব্লগার দিয়ে একটি ফ্রি ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখানে আপনি গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা
ইনকাম করতে পারবেন।
এর আগে জেনে নেওয়া ভালোঃ
গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করার উপায়
এডসেন্স থেকে টাকা তোলার পদ্ধতি
গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায়
এডসেন্স থেকে আয় কি হালাল নাকি হারাম?
গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ব্লগার থেকে টাকা আয় করার প্রক্রিয়াটি বাস্তবিক অর্থে একটু জটিল।
আপনার মোট আয়ের অংশ থেকে গুগল এখানে কিছুটা কেটে রেখে দিবে।
এর কারন হলো, আপনি গুগলের সার্ভিস তথা ডোমেইন এবং হোস্টিং ব্যবহার করছেন।
যদি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতেন তাহলে এইগুলো টাকা দিয়ে আপনাকে কিনে নিতে হতো।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ
আফিলিয়েট মার্কেটিং হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রতিমাসে প্রচুর টাকা আয় করা যায়।
এর জন্য অবশ্যই একটি ওয়েবসাইটের প্রয়োজন হয়।
আর ব্লগার দিয়ে আপনি খুব সহজেই এই ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবেন এবং সেখানে এফিলিয়েট
মার্কেটিং এর মাধ্যমে হালালভাবে টাকা আয় করতে পারবেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য অনেক প্লাটফর্ম রয়েছে। যেমনঃ
Amazon
Alibaba
আপনার ওয়েবসাইটে অনেকগুলো কন্টেন্ট হয়ে গেলে এসকল ই-কমার্স ওয়েবসাইটে এমাজন
এফিলিয়েট প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারেন।
আপনি এপ্রোভাল পেয়ে যান তাহলে আপনার ওয়েবসাইটে তাদের বিভিন্ন প্রোডাক্ট নিয়ে আর্টিকাল
লিখবেন।
ভিজিটররা আপনার লেখা প্রোডাক্টি সম্পর্কে পড়ে যদি লিংককে ক্লিক করার মাধ্যমে ঐ প্রোডাক্টটি ক্রয়
করে তাহলে আপনি কমিশন পেয়ে যাবেন।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
স্পন্সরশিপ রিভিউঃ
স্পন্সরশিপ রিভিউ এর মাধ্যমে ব্লগার থেকে টাকা আয় করতে হলে প্রথমে আপনাকে আপনার ব্লগার
ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট টপিক নিয়ে লেখালেখি করে যেতে হবে।
আমি আমার ওয়েবসাইটে টেক রিলেটেড কন্টেন্ট প্রকাশ করি। এর ফলে টেক রিলেটেড বড় বড়
কম্পানিগুলো আমার ওয়েবসাইটে তাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে আর্টিকাল পাবলিশ করে।
যার বিনিময়ে আমাকে টাকা দিয়ে থাকে।
ধরেন আপনি, আপনার ব্লগার সাইটে ডোমেইন নিয়ে লিখতে পারেন।
এর ফলে বড় হোস্টিং কম্পানিগুলো আপনাকে টাকা দিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে তাদের সার্ভিস
সম্পর্কিত স্পন্সর পোস্ট প্রকাশ করতে চাইবে।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রিঃ
আপনার যদি একটি ব্লগার ওয়েবসাইট থাকে এবং সেখানে নিয়মিত ভিজিটর আসতে থাকে তাহলে
আপনি আপনার ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারবেন।
ডিজিটাল প্রোডাক্টের উদাহরন হলো অডিও, ভিডিও, ই-বুক, পিডিএফ ফাইল, ইত্যাদি যেগুলো
ডিজিটালি আধান-প্রধান করা যায়।
এই সকল প্রোডাক্টগুলো আপনি ব্লগারের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
ডিজিটাল সার্ভিসঃ
অনলাইনে ডিজিটাল সার্ভিস দেওয়ার মাধ্যমেও টাকা আয় করা যায়।
আপনি ডিজিটাল সার্ভিস দেওয়ার মাধ্যমে ব্লগার থেকে টাক আয় করতে পারবেন।
এর জন্য আপনার ব্লগার ওয়েবসাইটের মেনুতে Services নাম দিয়ে একটি অপশন রাখবেন এবং
সেখানে আপনার বিভিন্ন ডিজিটাল সার্ভিস যুক্ত করে দিবেন।
যেমন, আর্টিকাল রাইটিং সার্ভিস, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট , এসইও সার্ভিস, ডাটা এন্ট্রি,
ইত্যাদি।
আপনি যে বিষয়ে বেশি পারদর্শী সে বিষয়ে সেবা দিয়ে ব্লগার ওয়েবসাইট থেকে আপনি টাকা আয়
করতে পারবেন।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
অনলাইন কোর্স বিক্রিঃ
আপনার ব্লগার সাইটে যদি মূল্যবান কন্টেন্ট লিখেন তাহলে ভিজিটরা আপনার প্রতি আকৃষ্ট হবে।
এবং আপনার কাছে থেকে বিভিন্ন টিপস এবং টিক্স জানতে চাইবে, শিখতে চাইবে।
আপনি একটি অনলাইন কোর্স বানিয়ে তা তাদের কাছে বিক্রি করে দিতে পারবেন।
এভাবে অনলাইনে কোর্স বিক্রি করার মাধ্যমেও ব্লগার থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
গেস্ট ব্লগিংঃ
গেস্ট ব্লগিং হলো নিজের ওয়েবসাইটে অন্য কাউকে লিখার জন্য অনুমতি দেওয়া।
আপনার ব্লগার ওয়েবসাইটটি যদি এসইও তে ভালো পজিশনে থাকে, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটে
অনেক ব্লগাররা লিখতে আগ্রহী হবে।
এবং এর জন্য আপনাকে ওরা টাকা ও দিবে।
তাহলে চিন্তা করে দেখুন, আপনি এক সাথে ২ টি জিনিস পাচ্ছেন।
ওনারা আপনার ব্লগিং ওয়েবসাইট এর জন্য আর্টিকাল লিখেও দিচ্ছে আবার এর জন্য আপনাকে টাকাও
দিচ্ছে।
তো এর জন্য অবশ্যই আপনাকে এসইও শিখতে হবে।
তাছাড়াও, অধিকাংশ বাংলা সাইটগুলোর একমাত্র ইনকাম সোর্স হচ্ছে গুগল এডসেন্স।
এসইও (SEO) কি এবং কিভাবে ওয়েবসাইটের এসইও করবো ?
তো ব্লগার থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য গেস্ট ব্লগিং অন্যতম একটি উপায় হতে পারে।
Blogger থেকে কত টাকা আয় করা যায়।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
ব্লগার থেকে টাকা আয়ের ব্যাপারটা নির্ভর করে CPC এবং CPM এর উপর। আপনার গুগল এডসেন্স-
এর CPC এবং CPM যদি ভালো হয় তাহলে ব্লগার থেকে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন।
আর CPC এবং CPM খারাপ হলে আয়ের সংখ্যা খুব নগণ্য বলে মনে হবে।
CPC হলো Cost per click. প্রতিটি বিজ্ঞাপনে ক্লিক করার জন্য গুগল এডসেন্স আপনাকে কত টাকা
দিবে তা CPC দ্বারা নির্ধারন করা হয়।
আর CPM হলো Cost per Miles. প্রতি ১০০০ বিজ্ঞাপন দেখানোর ফলে এডসেন্স আপনাকে কত টাকা
দিবে তা CPM দ্বারা নির্ধারন করা হয়।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
বাংলাদেশের চেয়ে ইউরোপ-আমেরিকার CPC এবং CPM অনেক বেশি ভালো হয়। ফলে, ঐসব দেশ
থেকে ব্লগার সাইটে ভিজিটর আসলে আপনার ইনকাম বেশি হবে।
বাংলা লিখে ব্লগার থেকে টাকা আয়
অনেকে অনেক সময় জিজ্ঞাসা করেন যে বাংলায় আর্টিকাল লিখে ব্লগার থেকে টাকা আয় করা যাবে
কিনা।
হ্যা, অবশ্যই যাবে।
মনে করুন, কেউ যদি আপনাকে প্রশ্ন করে বাংলা ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল
প্রয়োজন হয়? তাহলে আপনি নির্দীদ্বায় বলে দিতে পারবেন গুগল এডসেন্স।
আর বাংলা সাইটগুলোতে গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম তুলনামূলকভাবে খুব কম হয় ।
ধরুন, আমেরিকা থেকে ১০০ ভিজিটর আসলে যদি আপনার ইনকাম ৫০০ টাকা হয়, সেখানে
বাংলাদেশ থেকে ভিজিটর আসলে আপনার ইনকাম হবে সর্বোচ্চ ৫০-১০০ টাকা।
আমার বাংলা ব্লগ থেকে প্রতিমাসে এখন গড়ে ১০ ডলার ইনকাম হয়। এবং লেখা আমার ব্লগ পড়তে
প্রতিমাসে ৩০০০+ ভিজিটর আমার বাংলা সাইটে আসে।
কিন্তু, ব্লগারে শুধু বাংলায় আর্টিকাল লিখলে বাংলাদেশ থেকেই অধিকাংশ ভিজটর আসে এবং ইনকাম
খুব কম হয়।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]
যেমন, প্রতিমাসে যদি ওয়েবসাইটে ৩০ হাজার ভিজিটর আসে তাহলে অনুমানিক ১০০ ডলার বা ৯০০০
টাকা পেতে পারেন।
তাই, আপনাদের বলি, যত তাড়াতাড়ি পারেন ব্লগিং শিখুন, কষ্ট করুন। এতে করে আপনার সুন্দর একটা
ক্যারিয়ার হবে।
ব্লগার একাউন্ট থেকে টাকা আয়
ব্লগার থেকে টাকা আয় করার পদ্ধতি উপরে ধাপে ধাপে আলোচনা করেছি আপনারা দেখেছেন।
ঐ প্রক্রিয়াগুলো অনুসরন করে ব্লগার থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।
[ব্লগার থেকে ইনকাম: ব্লগিং করে মাসে কতো টাকা আয় করা যায়?]